অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্টিলোকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় বুধবার (৭ নভেম্বর)। ওই দিন রাতেই ‘অভ্যুত্থান চেষ্টার’ অভিযোগে তাকে আটক করে পুলিশ। ক্ষমতা হারানোর পরপরই কাস্টিলো মেক্সিকোতে আশ্রয় চান। তার এ আবেদন বিবেচনা করছে উত্তর আমেরিকার দেশটিও।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ৫৩ বছর বয়সী কাস্টিলো এখন পেরুর রাজধানী লিমাতে বন্দি আছেন। অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরপরই কাস্টিলোর আশ্রয় আবেদনটি বিবেচনায় নিয়েছে মেক্সিকো। এরই মধ্যে তার আবেদনটি আইনজীবীদের মাধ্যমে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হয়েছে।
পেদ্রো কাস্টিলোর বিরুদ্ধে আগেই অভিশংসনের প্রস্তাব এনেছিলেন পেরুর আইনপ্রণেতারা। তখন নিজেকে রক্ষা করতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেন পেদ্রো। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ডিক্রি জারি করে দেশ শাসনের কথা বলেন।
সেসময় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি জানান, অস্থায়ীভাবে পার্লামেন্ট ভেঙে দেবেন, ডিক্রির মাধ্যমে শাসনভার পরিচালনা ও নতুন নির্বাচন আয়োজন করবেন। তার এ ঘোষণাকে সুষ্পষ্ট অভ্যুত্থান হিসেবে উল্লেখ করেন বিরোধী দলের সদস্যরা।
এমনকি তার নিজ দলের অনেক সদস্যও তার এ ডিক্রির বিরোধিতা করেন। মূলত, এরপরই পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশন ডেকে তাকে অভিশংসিত করা হয়।
এদিকে, অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই মেক্সিকোর আশ্রয়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন পেদ্রো। তবে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা পেরুর মেক্সিকান দূতাবাসে আশ্রয় নিতে বাধা দেন।
এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট দিনা বোলোয়ার্তে। ৬০ বছর বয়সী দিনা পেরুর ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। তিনি ২০২৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
এদিকে, এমন অস্থিরতার মধ্যেই মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডোরকে বুধবার রাতে চিঠি পাঠান কাস্টিলোর আইনজীবী। ওই চিঠিতে তাকে ‘বিচার ব্যবস্থার ভিত্তিহীন নিপীড়নের মুখে কাস্টিলোকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য’ অনুরোধ করা হয়েছে।
পেদ্রো কাস্টিলোকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ড। তিনি বলেন, পেরুতে নিযুক্ত মেক্সিকান রাষ্ট্রদূত পাবলো মনরয় লিমাতে কাস্টিলোর সঙ্গে দেখা করেছেন। আশা করি, কাস্টিলোকে আশ্রয় দেওয়ার সব প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হবে।
Leave a Reply